বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

টিপু সুলতান ১

"ইসলামিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান zami (০ পয়েন্ট)

X মহীশুরের সিংহ টিপু সুলতানের রকেট ক্ষেপণাস্ত্র পাল্টে দিয়েছিল পৃথিবীর ইতিহাস (১)। ১৯৬৩ সালের দিকে ভারতীয় প্রখ্যাত রকেট বিজ্ঞানী এ পি জে আবদুল কালাম প্রশিক্ষণের জন্য গিয়েছিলেন NASA’র ‘ওয়ালপস ফ্লাইট ফ্যাসিলিটিতে’। রিসেপশন লবিতে হাঁটার সময় একদিন তার চোখ আঁটকে গেল একটি চিত্রকর্মে। ছবিটি ছিল একটি যুদ্ধক্ষেত্রের, তাতে দেখা যাচ্ছে পেছন দিকে কয়েকটি রকেট ধেয়ে আসছে আর সামনে রকেট হামলায় বিধ্বস্ত একটি সৈন্যবাহিনীর ছবি। একটি রকেট ফ্লাইট কেন্দ্রে এমন পেইন্টিং থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু আব্দুল কালাম অবাক বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করলেন যে, রকেট নিক্ষেপকারী সৈন্যদের ঠিক ইউরোপিয়ান বা শ্বেতাঙ্গ মনে হচ্ছেনা। বরং তাদের মুখাবয়বে মিল আছে উপমহাদেশের লোকদের সাথেই। কৌতূহল চাপতে না পেরে পেইন্টিংটির কাছে এগিয়ে গেলেন তিনি। এটি ছিল মহীশুরের বীর টিপু সুলতানের বাহিনীর সাথে ব্রিটিশ সৈন্যদের যুদ্ধের ছবি। মহীশুরের সেনাবাহিনীর বিধ্বংসী সব রকেট ক্ষেপণাস্ত্রের হামলায় নাকাল ব্রিটিশ সৈন্যদের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল সেখানে। আবদুল কালাম একই সাথে বেদনা ও গর্বের অনুভূতি বোধ করলেন। রকেট প্রযুক্তিতে টিপু সুলতানের সেই অবিস্মরণীয় অবদানের কথা আজ তার নিজ দেশ ভারতবর্ষ বিস্মৃত হয়ে গেছে। কিন্তু তার অবদানের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাত ভোলেনি বিশ্বের অপর প্রান্তের প্রতিষ্ঠানটি। বস্তুত টিপু সুলতানকে আধুনিক রকেটের স্থপতি বলা যায়। সেসময়ের পৃথিবীতে রকেট ক্ষেপণাস্ত্রের সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি ইউরোপে নয়, ছিল আমাদের ভারতবর্ষে, দক্ষিণ ভারতের মহীশুরে। আমাদের আজকের লেখাটি টিপু সুলতান বাহিনীর এ অসাধারণ রকেট ক্ষেপণাস্ত্র নিয়েই। গানপাউডার ব্যবহার করে রকেট ওড়ানোর প্রযুক্তি সর্বপ্রথম উদ্ভাবন করে চাইনিজরা। বলা হয়ে থাকে অমরত্বের সন্ধানে “জীবনের পরশমণি” খুঁজতে গিয়েই তারা আবিষ্কার করে ফেলেন গানপাউডার। তারা তখন বিভিন্ন আনন্দ উৎসবে এ গানপাউডার ব্যবহার করতেন। একটি বাঁশের খোলসে গানপাউডার ভর্তি করে সেটি বিস্ফোরণের মাধ্যমে উৎসবের জৌলুশ বাড়ানো হতো। ধারণা করা হয় এমনি কোনো উৎসবে দুর্ঘটনাবশত আবিষ্কৃত হয়ে যায় রকেট। কোনো গানপাউডার ভর্তি টিউব একেবারে বিস্ফোরিত না হয়ে বেরিয়ে আসে অগ্নিকুণ্ড থেকে। এরপর গানপাউডার থেকে উৎপন্ন গ্যাস এবং স্ফুলিঙ্গ দ্বারা চালিত হয়ে ছিটকে যায় আকাশে। এ ঘটনার পর চাইনিজরা এ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা শুরু করে এবং গানপাউডার চালিত রকেট আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে মঙ্গোলীয়দের সাথে যুদ্ধে সর্বপ্রথম চাইনিজরা রকেট ব্যবহার করে। এর বিধ্বংসী ক্ষমতা তখন তত বেশী না হলেও এই নতুন প্রযুক্তি মঙ্গোলীয়দের মানসিকভাবে অনেক দুর্বল করে দেয়। এর পরে মঙ্গোলীয়রা নিজেদের রকেট প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে আর তাদের হাত ধরেই রকেট ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপে। মহীশুরে রকেটের আগমন কীভাবে হয়েছিল তা জানা যায়নি। তবে হায়দার আলী এবং পরবর্তীতে তার পুত্র টিপু সুলতানের হাত ধরে রকেট প্রযুক্তি এক অন্য মাত্রা পেয়েছিল। হায়দার আলীর সময় থেকেই মহীশুরের সেনাবাহিনীতে প্রায় বারোশজন রকেট-সৈনিক থাকত। ১৭৮০ সালের পল্লীলুরের যুদ্ধে হায়দার আলীর সেনাবাহিনীর কাছে ব্রিটিশদের শোচনীয় পরাজয়ের পেছনেও ছিল রকেটের অবদান। এ যুদ্ধে রকেট হামলার ফলে ইংরেজদের অস্ত্র গুদামে আগুন ধরে যায়। আর এটিই ডেকে আনে তাদের পরাজয়। টিপু সুলতানের আমলে মহীশুরকে মুখোমুখি হতে হয় আরো শক্তিশালী ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে। প্রজ্ঞাবান টিপু বুঝতে পেরেছিলেন ইংরেজদের সাথে টিকে থাকতে নতুন কিছু উদ্ভাবনের বিকল্প নেই। এ তাড়না থেকেই রকেট উন্নয়ন নিয়ে তাদের গবেষণায় জোর দেন তিনি। মহীশুরে রকেট প্রযুক্তিতে সবচেয়ে বড় যেই পরিবর্তনটি আনা হয় তা হলো রকেটের জ্বালানী কক্ষ হিসেবে লোহার তৈরি বাক্স ব্যবহার। আগে এর জন্য বাঁশ বা অন্যান্য দুর্বল পদার্থের কাঠামো ব্যবহার হতো। এ বিষয়টিই মূলত মহীশুরীয়ান রকেটকে ইউরোপের রকেট থেকে আলাদা করে তোলে। ধাতব কাঠামোর জন্য রকেটের জ্বালানী অর্থাৎ ব্ল্যাক পাউডারের বিস্ফোরণ অধিকতর প্রকট হতো। এর ফলে সৃষ্টি হতো অধিক গতিবেগ, রকেট পাড়ি দিতে পারতো আরো বেশী পাল্লার দূরত্ব (সর্বোচ্চ দুই কিলোমিটার পর্যন্ত)। সে সময়ের ইউরোপের রকেটগুলোর দূরত্বের পাল্লা বা গতিবেগ এর কাছাকাছিও ছিল না। এছাড়াও টিপু সুলতান রকেটের সাথে তরবারি সংযুক্ত করে একটি পদ্ধতি উদ্ভাবনের ধারণা দেন। রকেট এটি নির্দিষ্ট দূরত্ব উড়ে শত্রুর কাছাকাছি যাওয়ার পর যেন ঠিকভাবে ঘুরে গিয়ে তরবারির অগ্রভাগ দিয়েই আঘাত হানতে পারে। তবে মহীশুরের রকেটে আঘাতের জন্যে সাধারণত চার ফুট লম্বা বাঁশের ফলা ব্যবহার করা হতো। এটি খাঁজের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকতো লোহার তৈরি জ্বালানি প্রকোষ্ঠের সাথে। এ জ্বালানি কক্ষ হিসেবে সাধারণত আট ইঞ্চি লম্বা এবং দেড় থেকে তিন ইঞ্চি ব্যাসের লোহার টিউব ব্যবহার করা হতো। এ টিউবের ব্যাস ও লক্ষ্যবস্তুর দূরত্ব হিসেব করে একটি নির্দিষ্ট কৌণিক দিকে রকেট নিক্ষেপ করতে হতো। এজন্য রকেট সৈনিকরা বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতেন। এছাড়াও ছিল বিশেষভাবে নির্মিত রকেট লঞ্চার, যার থেকে একসাথে পাঁচ থেকে দশটি রকেট নিক্ষেপ করা যেত। চলবে..


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৪১১ জন


এ জাতীয় গল্প

→ টিপু সুলতান

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • ♣Black Rose ♣
    Guest ৫ বছর, ৭ মাস পুর্বে
    Nice